যে ৪ টি কারণে পিতার সম্পত্তি পাবে না কন্যারা।বাংলাদেশে সদ্য কার্যকর হওয়া নতুন ভূমি আইন উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি বণ্টন নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ইসলামী শরিয়াহ অনুসারে, কন্যা সন্তান পিতার সম্পত্তিতে নির্দিষ্ট অংশের অধিকার রাখে—যা পুত্র সন্তানের অর্ধেক। তবে বাস্তব আইনি প্রক্রিয়ায় এমন কিছু ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে কন্যারা পুরোপুরি সেই অধিকার হারাতে পারেন।
আইনজীবীদের মতে, এসব পরিস্থিতি শরিয়াহর পরিপন্থী নয়, বরং আইন ও প্রশাসনিক বাস্তবতার কারণে ঘটে। নিচে এমন চারটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো—
—
১️⃣ ১৯৬১ সালের ১৫ জুলাইয়ের পূর্বের ঘটনা
যদি কোনো কন্যা পিতার মৃত্যুর আগে মারা যান এবং ঘটনাটি ১৯৬১ সালের ১৫ জুলাইয়ের আগে ঘটে, তাহলে তার সন্তানরা (দাদার নাতি-নাতনি) দাদার সম্পত্তিতে অংশ পাবেন না। কারণ, সেই সময় “প্রতিনিধিত্বমূলক উত্তরাধিকার” আইনটি কার্যকর ছিল না।
—
২️⃣ কন্যার মৃত্যুর সময় সন্তান না থাকা
যদি কন্যা মৃত্যুর সময় কোনো সন্তান রেখে না যান, তাহলে তাঁর স্বামী বা শ্বশুরের পরিবার পিতার সম্পত্তিতে কোনো অধিকার দাবি করতে পারবেন না। কারণ, উত্তরাধিকারের নিয়মে শুধুমাত্র গর্ভজাত সন্তানই সেই অধিকার পায়।
৩️⃣ পিতার হত্যায় জড়িত কন্যা
যদি কোনো সন্তান—ছেলে বা মেয়ে—নিজ পিতার হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হন, তবে তিনি আর উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি পাবেন না। মুসলিম ও হিন্দু—দুই আইনেই এ বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে।
—
৪️⃣ জীবদ্দশায় সম্পত্তি হস্তান্তর
যদি পিতা জীবিত অবস্থায় বৈধভাবে সম্পত্তি বিক্রি, হেবা বা দান করেন এবং তা রেজিস্ট্রি হয়, তাহলে পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে সেটি বাতিল করা প্রায় অসম্ভব। ফলে কন্যা সন্তান বঞ্চিত হলেও, সেই সম্পত্তি আর ফেরত পাওয়া সম্ভব নয়।
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন ভূমি আইনে তিন মাসের মধ্যে উত্তরাধিকার সম্পত্তি হস্তান্তরের নিয়ম প্রশাসনিক জট কমাতে সহায়ক হতে পারে, তবে এতে মানবিক ও পারিবারিক জটিলতা তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।