এবারের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) নিলামে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আগ্রহ অনেকটাই ম্রিয়মাণ ছিল। ১২ জন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের নাম তালিকায় থাকলেও মাত্র দুজন—মুস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেন—নিলামের চূড়ান্ত তালিকায় জায়গা করে নেন। কিন্তু তাদের কেউই কোনো দলের মন জয় করতে পারেননি।
বিষয়টি বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের হতাশ করলেও এটি সাকিব-মুস্তাফিজদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে।
পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল), যা সাধারণত ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হয়, সেই সময়সূচি পরিবর্তন করে এখন থেকে এপ্রিল-মে মাসে আয়োজন করা হবে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের ফলে পিএসএল এবার আইপিএলের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক হবে।
তবে বাংলাদেশের তারকাদের জন্য এটি বড় একটি সুযোগ। কারণ, এই সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তারা মুক্ত থাকবেন এবং পিএসএলে অংশ নেওয়ার সুযোগ পেতে পারেন।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও সাকিব আল হাসানের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা পিএসএলের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নজর কাড়তে পারেন। মুস্তাফিজের স্লোয়ার, তাসকিনের গতি এবং সাকিবের অলরাউন্ড দক্ষতা প্রতিটি দলকে শক্তিশালী করতে পারে।
পিএসএল ইতোমধ্যেই তার ব্যাট-বলের প্রতিযোগিতা, উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ এবং প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছে। আইপিএল ও পিএসএল একই সময়ে অনুষ্ঠিত হওয়ায় যেখানে
আইপিএলে বড় তারকারা ব্যস্ত থাকবেন, সেখানে পিএসএলে অন্যান্য আন্তর্জাতিক তারকাদের চাহিদা বাড়বে। এর ফলে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা নিজেদের প্রমাণ করার জন্য আদর্শ মঞ্চ পেতে পারেন।
যদিও আইপিএলে দল না পাওয়া একটি হতাশার বিষয়, তবে পিএসএলে ভালো পারফরম্যান্স করে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা নিজেদের আরও উচ্চমানের খেলোয়াড় হিসেবে তুলে ধরতে পারবেন। এমনকি পিএসএলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স তাদের আইপিএলে ভবিষ্যতে সুযোগ পাওয়ার পথও তৈরি করতে পারে।
বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে তাদের প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছেন। পিএসএল সেই ধারাবাহিকতায় আরও একটি মাইলফলক হতে পারে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের সুনাম বৃদ্ধির পাশাপাশি তারা ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেও নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন।
আইপিএলে দল না পাওয়ার হতাশা ভুলে পিএসএলে ভালো পারফরম্যান্স করাই এখন বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাও আশা করছেন, তাদের প্রিয় তারকারা পিএসএলে নিজেদের সেরা খেলাটা উপহার দেবেন। এখন দেখার বিষয়, পিএসএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সাকিব-মুস্তাফিজদের প্রতি কতটা আগ্রহ দেখায়।
বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের জন্য পিএসএল হতে পারে প্রতিভা প্রদর্শনের অন্যতম বড় মঞ্চ। দেশের গর্ব হয়ে এই মঞ্চে তারা নিজেরা আরও উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে উঠবেন বলে ভক্তরা বিশ্বাস রাখছেন।