প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকাটা এই মুহূর্তে বেশ দৃষ্টি সহনীয়। অতীতে তালিকার শীর্ষ দশে স্থানীয় কারো নাম খুঁজে পাওয়া যেত না। সেখানে এবার শীর্ষে একজন ঘরের ছেলে আছেন। প্রথম ১২ জনের ছয়জনই স্থানীয়।
লিগে ম্যাচ হয়েছে চারটা। লিগের পাশাপাশি ফেডারেশন কাপও মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে স্থানীয়রা গোল পাচ্ছেন এবার শুরু থেকেই।
এবার গোল করছেন ঘরের ছেলেরা৯ ম্যাচের প্রথম পর্ব। ৪ ম্যাচ শেষে লিগ টেবিলও এবার ব্যতিক্রমী।
মনে হতে পারে যে সত্তর-আশির দশক যেন ফিরেছে। শীর্ষে মোহামেডান, তার পরই রহমতগঞ্জ। এরপর আবাহনী, ব্রাদার্স। পেশাদার লিগের দাপুটে বসুন্ধরা কিংস এবার মৌসুমের শুরুতেই দুটি ম্যাচ হেরে আছে পঞ্চম স্থানে।
মোহামেডান চার ম্যাচের সব কটিতেই জিতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রহমতগঞ্জের পয়েন্ট ৯। মোহামেডান রহমতগঞ্জ এই ধারা ধরে রেখে এগোতে পারবে কিনা কিংবা ৫ গোল করা পুলিশের আল আমিনও একই ছন্দে থাকেন কি না সেটিই এখন দেখার। সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় সুলেমান দিয়াবাতের পাশেই এখন এই তরুণ। বলা যায়, এই মৌসুমেই নিজেকে চেনাচ্ছেন যশোরের শামসুল হুদা
একাডেমিতে বেড়ে ওঠা এই স্ট্রাইকার।
গত বছর শেখ জামালে খেলেছিলেন। এই মৌসুমের জন্যও শেখ জামালের সঙ্গে ভালো একটা চুক্তি করেছিলেন। কিন্তু জামাল শেষ পর্যন্ত দলবদল না করায় অথৈ সাগরে পড়েছিলেন আল আমিন, ‘আমি আর কোনো দল পাচ্ছিলাম না। এই মৌসুমে শেষ পর্যন্ত মাঠে নামতে পারব কি না, তা নিয়েই শঙ্কা ছিল। অবশেষে পুলিশে একেবারে অল্প পারিশ্রমিকে খেলার একটা সুযোগ পেলাম। শুরুতেই ভেবেছি যে ভালো খেলতে না পারলে সামনে এই জায়গাটাও আর পাব না।
আমাকে হয়তো ফুটবলই ছেড়ে দিতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ এখন গোল পাচ্ছি। প্রথম লেগে অন্তত সাত-আটটা গোল করতে চাই।’ প্রথম চার ম্যাচে ৫ গোল করে ফেলা আল আমিনের লক্ষ্যপূরণ মোটেও অসম্ভব নয়।
এবার গোল করছেন ঘরের ছেলেরাছন্দে থাকা আল আমিনের জন্য লক্ষ্যপূরণ এখন সহজ মনে হলেও স্থানীয় ফুটবলাররা এই কাজটা অনেক কঠিন বানিয়ে রেখেছিলেন এত দিন। গত লিগে যেমন রাকিব হোসেন পুরো লিগে করেছিলেন ১০ গোল, স্থানীয়দের মধ্যে সেটাই ছিল সর্বোচ্চ। তার আগের লিগে স্থানীয় হিসেবে ৮ গোল ছিল এলিটা কিংসলের, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইকবাল হোসেনের, ৫। এবার লিগে ব্রাদার্সের বিপক্ষেই শুধু গোল পাননি আল আমিন।
ফকিরেরপুল ও ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে করেছেন জোড়া গোল। মোহামেডানের কাছে দল হারলেও লক্ষ্যভেদ ছিল তাঁর। আল আমিনের এখন চাওয়া যত বেশি সম্ভব গোল করে জাতীয় দলের কোচের নজরে পড়া। সেই লক্ষ্য আরো অনেকেরই। কিছুদিন আগে মালদ্বীপের বিপক্ষে অভিষেক হওয়া পিয়াস আহমেদ নোভা চান দলে নিয়মিত হতে। ফর্টিস এফসিতে এবার নিয়মিতই খেলার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি, গোলও করেছেন দুটি। ফর্টিস এবার ফেডারেশন কাপে কিংসকে হারিয়ে চমক দিয়েছে।
সেই ম্যাচে দুর্দান্ত গোল করা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আবার জাতীয় দলে ফেরার পথ খুঁজছেন ঘরোয়া পারফরম্যান্স দিয়ে।
নাবিব নেওয়াজ জীবন আবার জাতীয় দলে ফিরবেন কি না, সময়ই তা বলবে। তবে এই মৌসুমে আবাহনী থেকে রহমতগঞ্জে নাম লিখিয়ে নিজেকে ফিরে পেয়েছেন এই স্ট্রাইকার। এর মধ্যেই ৪ গোল করেছেন। নাবিব আশাবাদী দল ও নিজের এই পারফরম্যান্স ধরে রাখার ব্যপারে।
কিংসের চেয়ে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে এই মুহূর্তে শীর্ষে থাকা মোহামেডানকে নিয়েও যেমন আশাবাদী কোচ আলফাজ আহমেদ, ‘খেলা এখনো যথেষ্টই বাকি। তবে আমাদের একটা ভালো সুযোগ আছে। আমরা চেষ্টা করব যেন এই ছন্দটা না হারায়। ’