প্রথম দুই ওয়ানডেতে হেরে সিরিজ খুইয়েছে জিম্বাবুয়ে। পরাশক্তি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এমন ফলই ধরে রাখে জিম্বাবুয়ের সমর্থকরা। এরপরও হোয়াইটওয়াশ হতে কে চায়। আর হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে দুর্দা’ন্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল আফ্রিকার দেশটির। ক্রি’কেটবিশ্বকে চমকে দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে তৃতীয় ওয়ানডেতে
হারিয়েই দিল জিম্বাবুয়ে। ৩ উইকেটের জয় তুলে নিয়ে ইতিহাসই গড়ে ফেলল রেগিস চাকাভার দল। গোটা ম্যাচেই দাপট দেখিয়েছে জিম্বাবুয়ে। শনিবার টাউন্সভিলে রায়ান বার্লের ঘূর্ণিতে ১৪১ রানেই গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ১৪২ রানের তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৩৮ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। জশ হেজেলউডের বলে
স্টিভেন স্মিথের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১৯ রানে ফেরেন কাইতানো। ১১তম ওভারে পরপর দুই বলে ওয়েসলি মাধেভেরে আর শন উইলিয়ামসকে সাজঘরে ফেরান সেই হেজেলউড। মা’ধেভেরে ২ রান করলেও উইলিয়ামস রানের খাতাই খুলতে পারেননি। এর কিছু পরেই দারুণ
ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজাও মার্কাস স্টইনিসের বলে ফেরেন ১৯ বলে ৮ রান করে। এতে বিপদে পড়ে জিম্বাবুয়ে। তবে একপ্রান্ত ধরে রেখে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে দলকে জ’য়ের বন্দরে ঠিকই পৌঁছে দেন অধিনায়ক রেগিস
চাকাভা। ৭২ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। ওপেনার তাদিওয়ানাশে মারুমানিওর খেলেন ৪৭ বলে ৩৫ রানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। অধিনায়ককে প্রথমে সঙ্গ দেন টনি মুনইয়োঙ্গা (৪০ বলে ১৭ রান)। দ’লীয় ১১৫ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে তার বিদায়ের পর
বল হাতে ভেল্কি দেখানো রায়ান বার্ল ব্যাট হাতে সঙ্গ দেন অধিনায়ককে। জয় থেকে যখন কেবল ৫ রান দূরে দল, তখন বার্ল (১৭ বলে ১১ রান) ফেরেন মিচেল স্টার্কের শিকার হয়ে। পরের পাঁচটা রান কোনো বিপদ ছা’ড়াই তুলে নেয় জিম্বাবুয়ে। এর আগে টস জিতে
ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ব্যাট হাতে নেমে ১০ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। মূলত: জি’ম্বাবুয়ান বোলারদের কাছে রীতিমতো নাস্তানাবুদ হয়েছে অসি ব্যাটাররা। অসিদের বড় লজ্জা থেকে বাঁচিয়েছেন কেবল ওপেনার ডেভিড
ওয়ার্নার। একটা প্রান্ত ধরে রেখে ৯৬ বলে ৯৪ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। বাকিরা মিলে করেছেন মাত্র ৩৮ রান। অতিরিক্ত থেকে আসে ৯। ষষ্ঠ উইকেটে ওয়ার্নারকে কিছুটা সঙ্গ দিয়েছিলেন অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। তা’দের ইনিংস সর্বোচ্চ ৫৭ রানের জুটিতে ভর করেই
১০০ রান ছাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ। তবে ২৭তম ওভারে আক্রমণে আসা বার্লের দারুণ সব ডেলিভারিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ম্যাক্সওয়েলকে ১৯ রানে ফেরানোর পর অ্যাশটন অ্যাগারকে রানের খাতাই খুলতে দেয়নি বার্ল। নিজের পরের
ওভারে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা ওয়ার্নারকেও বিদায় করেন তিনি। ৩১তম ওভারে আবারও আক্রমণে এসে মিচেল স্টার্ক আর জশ হেজেলউডকেও বিদায় করেন বার্ল। ওয়ার্নারের সঙ্গে দুই অংক ছুঁতে পেরেছেন কেবল গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ৫, স্টিভেন স্মিথ ১, অ্যালেক্স কারে ৪, মার্কাস স্টয়নিস আউট হন মাত্র ৩ করে।
৩ ওভারে ১০ রান খরচায় বার্ল পান ৫ উইকেট। তাতেই ১৪১ রানে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ৩ উইকেটের এই জয়ে ইতিহাস গড়া হয়েছে জিম্বাবুয়ের। ঘরের মাঠে এই প্রথম অস্ট্রেলিয়াকে হারাল জিম্বাবুয়ে। এ নিয়ে অসিদের বিপক্ষে ৩ বার জিতল আফ্রিকার দলটি। প্রথম দুই জয়ের প্রথমটি ছিল নটিংহ্যামে ১৯৮৩ বিশ্বকাপের ম্যাচে। দ্বিতীয়টি আসে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই।