এশিয়া কাপের দল ঘোষণার সময় বাংলাদেশ দলের স্কোয়াডে ছিলেন মাত্র দুজন ওপেনার। সে সময় টাইগারদের টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল মেইকশিফট ওপেনারের কথা। পরে এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সে পথেই হাঁটে
দল। বিশ্বকাপের দল ঘোষণাতেও একই ইঙ্গিত দিলেন নির্বাচকরা। তবে কী বিশ্বকাপে মেইকশিফট ওপেনার খেলাবে বাংলাদেশ? এশিয়া কাপে টাইগারদের স্কোয়াডে প্রথমে ডাক
পেয়েছিলেন মাত্র দুজন ওপেনার। পরে অবশ্য এনামুল হক বিজয় ও নবাগত পারভেজ হোসেন ইমনের সঙ্গে তৃতীয় ওপেনার হিসেবে ডাক পান নাঈম শেখ। সে টুর্নামেন্টের
প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওপেনার হিসেবে বিজয়-নাঈম ব্যর্থ হলে দ্বিতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মেইকশিফট ওপেনার হিসেবে সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজকে
খেলায় টাইগাররা। যদিও নতুন ভূমিকায় সাব্বির সেদিন সফল হননি তবে দারুণ ব্যাট করেন মিরাজ। ২২ বলে খেলেন ৩৯ রানের ইনিংস। মেইকশিফট ওপেনারের প্রচলন অবশ্য
নতুন নয়। বিভিন্ন দল প্রায়ই অনেককে এই ভূমিকায় খেলিয়ে থাকে। বিশেষ করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তো অহরহ এমনটা দেখা যায়। পাওয়ারপ্লে কাজে লাগাতে মারকুটে ব্যাটার হিসেবে
আইপিএলে সুনীল নারাইনকে কাজে লাগাতে দেখা তো টাটকা উদাহরণ। খোদ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে আফিফ হোসেনকে দেখা গেছে ইনিংস উদ্বোধন করতে।
টি-টোয়েন্টিতে নিয়মিত ওপেনাররা ব্যর্থ হওয়ায় টাইগাররা প্রায়ই পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে। তাই পাওয়ারপ্লে কাজে লাগাতে বিশ্বকাপের মঞ্চেও মেইকশিফট ওপেনার খেলাবে বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। যে সাহসটা তারা
পাচ্ছে এশিয়া কাপের সেই ম্যাচেই। বাংলাদেশের দলের টেকনিক্যাল কনসালট্যান্ট শ্রীরাম শ্রীধরনের প্রেসক্রিপশনে যে ইনিংসের শুরুতে দ্রুত রান তুলতে ওষুধ হিসেবে মেইকশিফট ওপেনারেই ভরসা তা বোঝা যায় বিশ্বকাপের
জন্য ঘোষিত স্কোয়াডের দিকে নজর দিলেও। স্কোয়াডে ওপেনিং ব্যাটার হিসেবে আছেন শুধুমাত্র লিটন দাস। ১৫ সদস্যের দলে বাকিদের কেউই নন প্রথাগত ওপেনার। ওপেনিং ব্যাটার ওপেনার
হিসেবে লিটন দাস থাকলেও বাতাসে গুঞ্জন এই ডানহাতিকে বিবেচনা করা হচ্ছে না ওপেনার হিসেবে। তাকে চার নম্বরের জন্য ভাবছে দল। লিটন সম্মতি দিলেই মুশফিকুর রহিমের জায়গায় ব্যাট করবেন তিনি।
বাতাসে আরও গুঞ্জন ছিল সৌম্য সরকারের দলে ফেরা নিয়ে। কিন্তু ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে জায়গা পাননি এই বাঁহাতি ওপেনার। আছেন স্ট্যান্ডবাই হিসেবে। তাই লিটন ওপেনার হিসেবে না খেললে
বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসের উদ্বোধন করতে দেখা যাবে দুজন মেইকশিফট ওপেনারকে। যে ভূমিকায় আপাতত এগিয়ে সাব্বির-মিরাজ জুটিই। তবে ওপেনার হিসেবে দেখা যেতে পারে বাঁহাতি
টপ অর্ডার ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্তকেও। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের কথায় তেমনই ইঙ্গিত। দল ঘোষণার পর গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘শান্তকে নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে।
অনেক অ্যানালাইসিস করা হয়েছে ব্যাকআপ একটা ওপেনার হিসেবে। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’ ১৯৯৬ বিশ্বকাপে আন্ডারডগ শ্রীলঙ্কা বিশ্বকে চমকে দেয় মেইকশিফট ওপেনার খেলিয়ে।
টুকটাক ব্যাট করতে পারা সনাথ জয়াসুরিয়া ও উইকেটকিপার রমেশ কালুভিথারানা ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে বদলে দিয়েছিলেন ওপেনিং ব্যাটারের সংজ্ঞা। বাংলাদেশ এই নতুন ধারায় কতটা সফল হবে তা সময়ই বলবে