প্রথম লক্ষ্য পূরণ হয়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের। কাঠমান্ডু যাওয়ার আগে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন এবং অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেছিলেন, তারা প্রথমে ফাইনাল নিশ্চিত করতে চান। আর ফাইনালে উঠলে শিরোপা জয়ের চেষ্টা। বাস্তবতা হলো- বাংলাদেশ এখন ফাইনালে।
২০১৬ সালে পর আবার বাংলাদেশ শিরোপার মঞ্চে। কেবল ফাইনালে ওঠাই নয়, এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে ভালো ফুটবল উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিটি ম্যাচ দাপটের সঙ্গে জিতেছে। এমনকি পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকেও গ্রুপ ম্যাচে পাত্তা দেয়নি বাংলাদেশ।
আগে কখনো যে ভারতকে হারানো যায়নি, সেই ভারতের বিপক্ষে সহজ জয়। অথচ বছর খানেক আগেও বাংলাদেশ শুধু ভালো করতো বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টগুলোতে। বিজ্ঞাপন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান এবং বাফুফের নি’র্বাহী কমিটির সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ সব সময়ই বলে আ’সছিলেন বয়সভিত্তিক দলের মেয়েরা অ’ভিজ্ঞ হলেই শ’ক্তিশালী জাতীয় দল তৈরি হবে।
কারণ সাবিনা খাতুন ছাড়া আর কোন সিনিয়র খেলোয়াড় দলে নেই। বয়সভিত্তিক দলের সেই মেয়েরাই এখন অভিজ্ঞ, তৈরি হয়েছে শক্তিশালী জাতীয় দল। তিনি নারী ফুটবলের আজকের এই সাফল্যের কারিগর কোচ গোলাম র’ব্বানী ছোটন ও এর পেছনে নেঃতৃত্বে মাহফুজা আক্তার কিরণ।
তিনি ফুটবলের এই মেয়েদের সারা বছর বাফুফে ভবনে ক্যাম্পে রেখে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন। ৬ বছর পর দক্ষিণ এশিয়ার টুর্নামেন্টের ফাইনালে বাংলাদেশ। এই সা’ফল্যের কৃতিত্ব একা নিতে চাননা বাফুফের নারী ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।
কাঠমান্ডু থেকে এক ভিডিও বার্তায় ফিফার এই কাউন্সিল মেম্বার বলেছেল, ‘এই সাফল্যে কারো একক কৃতিত্ব নেই। বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের দক্ষ নেতৃত্ব আর একটি টিম ওয়ার্কের কারণে বাং’লাদেশ আবার ফাইনালে।’ মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ দল আ’জকে সাফ চ্যা’ম্পিয়নশিপের ফাইনালে, সেজন্য অবশ্যই আমি বাংলাদেশ দলকে ধন্যবাদ জানাবো।
কিন্তু এর নেপথ্যে অনেক বড় গল্প আছে সেটা আপনাদের জানতে হবে। আমি সব সময় বলে আসছি, একজন ভালো লিডার যদি কোন অর্গানাইজেশনে থাকেন তখনই সেখানে একটা ভাল কাজ করা সম্ভব। বাং’লাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে সে রকমই একজন ভালে লিডার আছেন, তিনি আর কেউ নন- বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন।’
বাংলাদেশের এই সাফল্যের পেছনে টিম ওয়ার্কের অ’বদান উল্লেখ করে দক্ষ এই নারী সংগঠক বলে”ছেন, ‘কাজী মো. সা’লাউদ্দিনের নেতৃত্বে আমরা কাজ করে যাচ্ছি অ’নেক বেশি স্বাচ্ছন্দের সাথে। যে কারণে বাংলাদেশ নারী ফুটবল টিম আজকে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে।
এটা কারো একার কৃতিত্ব নয়, এখানে কাজ করছে টিমওয়ার্ক। আমরা সবাই মিলে কাজ করি। টেকনিক্যাল ডিরেক্টর পল স্মলি, প্রধান কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, সহকারী কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু’সহ আরো যারা কোচিং স্টাফে আছে তারা সবাই যেমন প’রিশ্রম করে তেমন একইভাবে আমাদের খে’লোয়াড়রা ভোর ৫ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৫-৬টা স্টেপে ট্রেনিং করে।
তারা যে, দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে একটা শৃঙ্খলা মেনে আসছে সে কারণেই আজকে আমরা এই রে’জাল্টটা পেয়েছি।’ এতদিন শক্তিশালী জাতীয় দল ছিল না। এখন তৈরি হয়েছে উল্লেখ করে মাহফুজা আ”ক্তার কিরণ বলেছেন, ‘আমি সব সময় একটা কথা বলে আসছি যে, আমাদের বয়সভিত্তিক দলগুলো ভালো করে
যাচ্ছে ভবিষ্যতে আমাদের শক্তিশালী একটি জাতীয় দল তৈরি হবে এবং তখন তারাও ভালো করবে। কারণ, আমি তো আর একটা সিনিয়র ন্যাশনাল টিম রাস্তা থেকে ধরে এনে তৈরি করতে পারি না। কারণ তাদেরও ৯০ মি’নিটে একই রি’দমে খেলতে হবে। সুতরাং, তাকে ফিজিক্যালি, মেন্টালি, টেকনিক্যালি, ট্যাকটিক্যালি তৈরি হতে হবে।
আজকে মনে করি যে, আমাদের জাতীয় দল তৈরি হতে পেরেছে কারণ আমাদের দলীয় প্রচেষ্টা।’ ফাইনালের জন্য দেশবাসীর দোয়া চেয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই, বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। ধন্যবাদ জানাতে চাই সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনকে যার নেতৃত্বে আমরা
এগিয়ে যাচ্ছি। কাজী মো. সালাউদ্দিনের মতো সভাপতি যদি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে না থাকতেন তাহলে আজকের দিন আমরা কখনোই দেখতাম না। আমি তার দী’র্ঘায়ু এবং সুস্বাস্থ্য কামনা করি। ধন্যবাদ বাং’লাদেশ দলকে। বাংলাদেশ দল আপনারা দেখেছেন
প্রত্যেকাটি ম্যাচ তারা ভালোভাবে জিতেছে। আপনাদের স’বার দোয়া চাচ্ছি ১৯ সেপ্টেম্বর ফাইনালে যেন তারা একই ভাবে শতভাগ প্রচেষ্টা দিয়ে চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে দেশে ফিরতে পারে। সবাইকে ধন্যবাদ।’