জাতীয় দলের সিরিজ চলাকালে গুঞ্জন উঠেছিল– তাসকিন আহমেদ আইপিএলে ডাক পেয়েছেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাতীয় দলের এ ফাস্ট বোলারের এজেন্ট চেষ্টা করছে একটি দলের সঙ্গে যুক্ত করতে। তাসকিনও বিষয়টি ঠিক এভাবেই তুলে ধরেছিলেন।
গতকাল জানা গেল, বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস মিডিয়াকে বলেছেন, আইপিএলে না যাওয়ায় আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হতে পারে সাকিব আল হাসান ও তাসকিন আহমেদকে। অর্থাৎ একজন পারিবারিক কারণে আইপিএলে না গিয়ে ক্ষতিপূরণ পাবেন, অন্যজন আইপিএলে দল না পেয়ে!
বিসিবি ‘কর্তা বাবুদের’ কাছে জিজ্ঞাসা, বিদেশের লিগে না গেলেও কি এখন থেকে বোর্ডকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে? তা না হলে সাকিব, তাসকিনকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রসঙ্গ আলোচনায় এলো কেন? বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের অফিসিয়াল বক্তব্যও রয়েছে একটি মিডিয়ার প্রতিবেদনে।
সাকিব খুব করে চাচ্ছিলেন আইপিএলে শেষবার খেলে নিতে। ৩০ মার্চ থেকে ২১ মে পর্যন্ত অনাপত্তিপত্র চেয়ে বোর্ডের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। বিসিবি তাতে রাজি হয়নি। প্রটোকল অনুযায়ী, ৯ থেকে ৩০ এপ্রিল ছুটি দিতে রাজি হয় বোর্ড। সেভাবে অনাপত্তিপত্র ইস্যু করা হয়। পরে লিটনের অনাপত্তিপত্রের মেয়াদ বাড়িয়ে ৫ মে পর্যন্ত করা হয়েছে। ১ এপ্রিল ভারতে যাওয়া মুস্তাফিজুর রহমানের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
সাকিবের জন্যও এই সুযোগ রেখেছিল বিসিবি। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্স লম্বা সময়ের জন্য চাচ্ছিল সাকিবকে। সেই সময় পর্যন্ত অনাপত্তিপত্র বোর্ড থেকে দিতে রাজি না হওয়ায় সাকিব নিজে থেকে কেকেআর থেকে সরে দাঁড়ান। কেকেআর আর সাকিব দু’পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতেই এ সিদ্ধান্ত। তাই সাকিবের আইপিএলে না যাওয়ার দায় বিসিবি নেব কেন?
এ ছাড়া জাতীয় দলের খেলা থাকলে নির্বাচিত প্রত্যেক ক্রিকেটারের খেলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এদিক থেকে দেখলে আইপিএল না খেলার জন্য সাকিবকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ ব্যাপারে সমকালের পক্ষ থেকে জালাল ইউনুসের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘বোর্ডে একবার আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’ এর পর এ প্রসঙ্গে আর কথা বাড়াতে চাননি বিসিবি ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান।
বাংলাদেশ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর চলাকালে ২০২২ সালের আইপিএল থেকে হঠাৎ ডাক পেয়েছিলেন তাসকিন। ডানহাতি এ ফাস্ট বোলারের ভীষণ ইচ্ছা ছিল আইপিএল খেলার। কিন্তু বিসিবি তাঁকে অনাপত্তিপত্র দেয়নি প্রটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ থাকায়। তাসকিনকে দিয়ে মিডিয়ায় বলানো হয়, দেশের স্বার্থে আইপিএলে যাবেন না। এ ক্ষেত্রে একটু ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন তাসকিন। কিন্তু এবারের আইপিএলে খেলার প্রস্তাব পাননি তাসকিন। বরং তিনি এজেন্টের মাধ্যমে চেষ্টা করেছেন দল পাওয়ার জন্য। একে তো আইপিএলে দল জোগাড় হয়নি, অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের আগে পাঁজরের পেশিতে টান পড়ায় খেলতে পারছেন না। মে মাসে আইরিশদের বিপক্ষে বিশ্বকাপ সুপার লিগের তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দলেও রাখা হয়নি তাঁকে। তিনিও কিনা আর্থিক ক্ষতিপূরণের আলোচনায়। আসলে বিসিবি কর্তারাই পারেন এমন অনাকাঙ্ক্ষিত আলোচনার জন্ম দিতে।