আগে ব্যাটিং নেওয়ার কৌতূহল জাগানিয়া একটা ব্যাখ্যা দিলেন সাকিব আল হাসান। সময় গড়ানোর সঙ্গে সেটার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে থাকল। ম্যাচ শেষে তা উচ্চকিত হলো আরও। আফগানিস্তানের
বিপক্ষে টস জিতে কেন আগে ব্যাটিং নিল বাংলাদেশ! এই প্রশ্নে মোসাদ্দেক হোসেনের উত্তর হলো চমকে দেওয়ার মতো। এই অলরাউন্ডার জানালেন, রশিদ খানকে ভাবনায় রেখে পরে ব্যাটিং করতে
চায়নি দল। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যদিও আগে ব্যাট করা দলেরই সাফল্যের হার বেশি। তবে সেই পরিসংখ্যানের কারণে টস জিতে ব্যাটিং নেওয়ার কথা সাকিব বলেননি। তাছাড়া, বেশি কিছুদিন বিরতির পর
খেলা হচ্ছে এই মাঠে। উইকেটের আচরণ নিয়ে সংশয়ও ছিল। এসব ক্ষেত্রে নিখাদ ব্যাটিং উইকেট না হলে সাধারণত পরে ব্যাটিংয়ের পথই বেছে নেওয়া হয়। ম্যাচের আগে পিচ রিপোর্টে ধারাভাষ্যকার রাসেল আর্নল্ড বলছিলেন, টস জিতলে আগে
বোলিং করা উচিত। কিন্তু সাকিব আগে নেন ব্যাটিং। সে সময় নিজের সিদ্ধান্তের পক্ষে সাকিবের যুক্তি ছিল, “উইকেট শুরুতে ব্যাটিংয়ের জন্য একটু ভালো থাকবে বলে মনে হচ্ছে। আমরা চাই ভালো একটি স্কোর গড়ে আফগানদের
চ্যালেঞ্জ জানাতে।”সাকিবরা তা পারেননি। উইকেট শুরু থেকেই ছিল বেশ মন্থর ও নিচু বাউন্সের। তেমন কোনো সুবিধা পাননি ব্যাটসম্যানরা। বাংলাদেশের টপ ও মিডল অর্ডার ভালো ব্যাটিংও করতে পারেনি।
৫৩ রানে ৫ উইকেট হারানো দল সাতে নামা মোসাদ্দেকের অপরাজিত ৪৮ রানের সৌজন্যে শেষ পর্যন্ত করতে পারে ১২৭ রান। সেই রানেও লড়াই জমেছিল বেশ। তবে নাজিবউল্লাহ জাদরানের খুনে ইনিংসে (১৭ বলে ৪৩) সেই রান ৯ বল বাকি থাকতে ৭
উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে যায় আফগানিস্তান। প্রথম দল হিসেবে এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত করে মোহাম্মদ নবির দল। ম্যাচ শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা মোসাদ্দেক জানালেন টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ের কারণ। “ওভারপ্রতি ৭-৮ রান করে লাগলে আপনি চাইবেন না রশিদ খানের বিপক্ষে
খেলতে। আমরা চেয়েছি আগে ব্যাটিং করে শুরুতে রান এগিয়ে রাখতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেটি করতে পারিনি। তবে আমি মনে করি, আমরা পুরোপুরি পরিকল্পনার মধ্যে
ছিলাম।”রশিদ অনেকবারই ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। এবার নেটে দেশি-বিদেশি মিলিয়ে তিন জন রিস্ট স্পিনার নিয়েও খুব লাভ হয়নি। ৩ উইকেট নিয়ে মিডল অর্ডারে সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দিয়েছেন রশিদই। তবে তাকে সামলানো নিয়ে বনের বাঘের চেয়ে মনের
বাঘই বাংলাদেশ দলকে বেশি খেয়েছে বলে মনে হওয়াটাই এখন স্বাভাবিক। সাকিবদের ভাবনা যা-ই থাকুক, টস হেরে ফিল্ডিং পেয়ে খুশিই মোহাম্মদ নবি। ম্যাচ শেষে আফগানিস্তান অধিনায়ক জানালেন, এতে তাদের উইকেট বুঝে নিতে সুবিধা হয়েছে। “আমি টসের সময়ও
বলেছি, নতুন পিচ, মাটি পরিবর্তন হয়েছে। এই পিচে কেউ খেলেনি। তাই আগে বোলিং করে ভালো হয়েছে। পিচ সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছি। বুঝতে পেরেছি পিচ কেমন আচরণ করছে। সেটা কাজে লাগিয়েই আমরা দ্রুত
উইকেট নিতে পেরেছি আর প্রতিপক্ষ দলকে চাপে রাখতে পেরেছি।”“এই পিচ (ব্যাটিংয়ের জন্য) এতটা খারাপ ছিল না। এটা মন্থর, ওরা আমাদের বোলারদের উপর চড়াও হতে চেয়েছিল। যে কারণে
উইকেট ছুঁড়ে এসেছিল। আমাদের ব্যাটিংয়ের সময় আমরা শুরুতে বেশি উইকেট হারাইনি। চাপ হজম করে নিয়েছি। পরে ওভার প্রতি ৯-১০ রানও সহজে করতে পেরেছি।”