সিরিজে সমতা ফেরাল ইংল্যান্ড। ওভালে ইংল্যান্ডকে ১০ উইকেটে হারালেও লর্ডসে পারল না ভারত। রান পেলেন না রোহিত, বিরাটরা। লর্ডসের দর্শক আসনে উপস্থিত ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এই মাঠের ব্যালকনি দেখেছিল তাঁর জামা খোলার ‘ঔদ্ধত্য’। ছিলেন বি’শ্বকাপজয়ী অ’ধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। মাঠে ছিলেন
ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটার সচিন তেন্ডুলকর। ভারতীয় ক্রিকেটের সেরাদের সামনেই ১০০ রানে হারল ভারত। সচিন, সৌরভ, ধোনিরা দেখলেন ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়। টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাট করতে পা’ঠিয়েছিলেন রোহিত। ওভালের মাঠে শুরুতেই উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে চাপে ফেলে
দিয়েছিলেন যশপ্রীত বুমরা। বৃহস্পতিবার সেটা হল না। শামি-বুমরাকে সামলে নিয়েছিলেন জেসন রয় এবং জনি বেয়ারস্টো। আট ওভার খেলেও ফেলেছিলেন। কিন্তু হার্দিক পাণ্ড্য আসতেই বিপদে পড়লেন রয়। নবম ওভারে তাঁর উই’কেট তুলে নিলেন ভারতীয় অ’লরাউন্ডার। ৪১ রানে প্রথম উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। জো
রুট এবং জনি বেয়ারস্টো ইনিংস গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। জুটিতে ৩১ রান যোগও করেন তাঁরা কিন্তু এর পরেই লর্ডসের মাঠে জাদু দেখান চহাল। তিনি প্রথমে ফেরান বেয়ারস্টোকে। ১০ রানের মধ্যেই ফে’রেন রুট। তাঁর উইকেটও নেন চহাল। মাত্র চার করে ফেরেন জস বাটলারও। তাঁকে ফেরান শামি। বেশি ক্ষণ
ক্রিজে টিকতে পারেননি বেন স্টোকসও। চহালের তৃতীয় শিকার তিনি। ১০২ রা’নের মধ্যে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফের এক বার ব্যাটিং বিপর্যয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিল ইংল্যান্ড। সেখান থেকে দলের হাল ধরেন লিয়াম লিভিংস্টোন এবং মইন আলি। লিভিংস্টোন মাঠে না’মার সঙ্গে সঙ্গে শামি তাঁকে একটি বাউন্সার করেন। বল লাগে
হেলমেটে। শামির সেই উষ্ণ অভ্যর্থনার জবাব দেন লিভিংস্টোন। ৩৩ বলে ৩৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন। মইন করেন ৪৭ রান। ৪১ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন ডেভিড উইলিইও। তাঁদের ইনিংসের দাপটেই ২৪৬ রান তুলে নেয় ইং’ল্যান্ড। ভারতের হয়ে চার উইকেট নেন চহাল। দু’টি করে উইকেট নেন যশপ্রীত বুমরা এবং হার্দিক পাণ্ড্য। একটি করে উইকেট নেন
মহম্মদ শামি এবং প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। লর্ডসের মাঠে তাঁরা একের পর এক উইকেট নিলেও ইংল্যান্ড প্রায় আড়াইশো রানের কাছে পৌঁছে যায়। ব্যাট করতে নেমে শূন্য রানে ফিরে যান রোহিত। গত ম্যাচে শতরানের জুটি গড়া শিখর-রোহিত জুটির শুরুতেই ইতি। শি’খর ধবন ক’রেন ৯ রান। চার নম্বরে নেমে ঋষভ পন্থ ফের
ব্যর্থ। শূন্য রানে উইকেট ছুড়ে দেন তিনি। ভারতের ইনিংস গড়ার জন্য সেই সময় দরকার ছিল বিরাট কোহলীর ব্যাটে রান। লর্ডসের মাঠে যে ভাবে তিনি ব্যাট করছিলেন তাতে রান পাওয়ার আশা করছিলেন অ’নেকেই। কিন্তু ফের ব্যর্থ বিরাট (১৬)। ডেভিড উইলির
বলে উইকেটরক্ষক বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন তিনি। লর্ডসে ইংল্যান্ডের ২৪৬ রান তাড়া করে জিততে হলে প্রয়োজন ছিল একটি বড় রানের জুটি। ৩১ রানের মধ্যে চার উইকেট ধুঁকতে থাকা ভারতকে সেই অ’ক্সিজেনটাই দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন সূ’র্যকুমার যাদব এবং হার্দিক পাণ্ড্য। রানের লক্ষ্য খুব
বেশি নয়, হাতে ছিল অনেকগুলো ওভার। ধীরে সুস্থে রান তুলতে শুরু করলেন তাঁরা। ৪২ রান যোগও করে ফেলেছিলেন। কিন্তু দিনটা ছিল রিচি টপলের। তাঁর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কাট মারতে গিয়ে উইকেটে টেনে আ’নলেন সূর্য। বোল্ড হলেন তিনি। মাত্র ২৭ রানেই
শেষ সূর্যর ইনিংস। এর পর ভারতের হার ছিল শুধুই সময়ের অপেক্ষা। হার্দিক এবং রবীন্দ্র জাডেজা শেষ চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। দু’জনেই করেন ২৯ রান। মহম্মদ শামি ২৮ বলে ২৩ রান করেন। কিন্তু তাঁদের ব্যাটিংয়ে ভারত জিতবে এমন আশা তৈরি হয়নি। লর্ডসের মাঠে
ছ’টি উইকেট নিয়ে দিনটি স্মরণীয় করে রাখলেন টপলে। ম্যাচের সেরাও হলেন তিনিই। একটি করে উইকেট নেন ডে’ভিড উইলি, ব্রাইডন কার্স, মইন আলি এবং লি’য়াম লিভিংস্টোন।