আফগানদের বিপক্ষে হারের পর পরিবর্তনের গুঞ্জন বেশ জোরেশোরেই শোনা যাচ্ছিল। সে গুঞ্জনকে সত্যি করে গতকাল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিনটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। এর মধ্যে
সবচেয়ে বড় চমক ছিল দুই নিয়মিত ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও নাঈম শেখকে বাদ দিয়ে দুই মেইক শিফট ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ ও সাব্বির রহমানকে দিয়ে শুরু করা।
এ পরিবর্তনের ফলাফলটা হাতেনাতেই পাওয়া গেছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল, যে কারণে এই পরিবর্তন, সেই সাহসটা মিরাজের ব্যাটিংয়ে দেখা গেছেে এটা বলাই যায় যে বিজয়-নাঈমকে ছাপিয়ে অবশেষে লিটনের ওপেনিং সঙ্গী খুজে
পেল বাংলাদেশ। অনেকের কাছে চমক হলেও দুই ওপেনারকে বাদ দেওয়াটা টিম ম্যানেজমেন্টের জন্য অবশ্যকর্তব্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আফগানদের বিপক্ষে বিজয় ও নাঈমের ব্যাটিং দেখে মনেই হয়নি যে তাঁরা টি২০ খেলতে নেমেছেন। মুজিবের বিপক্ষে দুই
ওপেনারকেই অসহায় মনে হয়েছিল। মুজিবের বিষয়টা তাও মানা যায়, কুড়ি ওভারের ফরম্যাটে এ অফস্পিনার বেশ পরিচিতই। তাঁরা পেসার ফজলহক ফারুকির ফুলটসেও শট খেলতে পারেননি। অবশ্য শট খেলার চেষ্টা তো দূরের কথা, তাঁরা ব্যাটে বল লাগাতেই পারছিলেন না। দলকে একটি ভালো শুরু কিংবা বড়
স্কোরের ভিত তৈরির কোনো রকম চেষ্টাই তাঁদের মধ্যে দেখা যায়নি। উইকেটে টিকে থাকতেই তাঁরা সংগ্রাম করেছেন। তাঁদের এ জঘন্য ব্যাটিংয়ের প্রভাব পুরো দলের ওপর পড়ে। তাই বাধ্য হয়েই ওপেনিংয়ে
পরিবর্তন আনতে হয়। এ পরিবর্তন যে কতটা প্রয়োজনীয় ছিল, সেটা প্রথম বলেই বুঝিয়ে দেন মিরাজ। মিরাজের না হয় বিপিএল ও একটি ওয়ানডেতে ওপেনিংয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে, কিন্তু সাব্বির তো এ পজিশনে একেবারে অনভ্যস্ত। তাই বলে
ভড়কে যাননি তিনি, প্রথম ওভারেই প্যাডেল সুইপ করে চার মারেন তিনি। একটি চার ছাড়া অবশ্য সাব্বির আর কিছু করতে পারেননি, তবে তাঁর শরীরী ভাষায় ভড়কে যাওয়া ভাবটা ছিল না। আর মিরাজ
তো ডাকাবুকো ব্যাটিং করেছেন। একটি বলেও লঙ্কানদের চেপে বসতে দেননি তিনি। চতুর্থ ওভারে স্পিনার থিকসেনাকে যেভাবে ডাউন দ্য উইকেটে এসে মিরাজ ছয় মেরেছেন, তাতে দলের মনোবল নিশ্চিতভাবেই বেড়েছে। আর
পঞ্চম ওভারে পেসার আসিথা ফার্নান্দোকে তিনি স্কুপ করে ছয় মেরেছেন, পরের বলেই দুর্দান্ত ড্রাইভে চার! মিরাজের কল্যাণেই পাওয়ার প্লেতে ৫৫ রান ওঠে। তার চেয়েও বড় বিষয়, ২৬ বলে ৩৮ রানের ভয়ডরহীন ইনিংসটি দিয়ে দলের ভেতর সাহসটা ছড়িয়ে দিয়েছেন মিরাজ।