এশিয়া কাপের মাঠে নামার আগেই উত্তেজনার পারদ ঊর্ধ্বমুখী বাংলাদেশ দলে। শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকার এক হুঙ্কার মরুর তপ্ত বালুর চেয়েও কথার উত্তাপের ঝাপটা
লেগেছে সাকিব আল হাসানদের গায়ে। শনিবার আফগানিস্তানের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করার পর সংবাদ সম্মেলনে লঙ্কান দলপতি বলেছেন, বাংলাদেশের বোলিং অত
শক্তিশালী না। টাইগারদের পরিকল্পনাও তাদের জানা। আফগানিস্তানের চেয়েও সহজ হবে টাইগারদের বিপক্ষে খেলা। রোববার বাংলাদেশ দল থেকেও দেখে নেওয়ার প্রচ্ছন্ন হুমকি গেছে
লঙ্কান শিবিরে। দলীয় প্রতিনিধি হয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ বলেছেন, ভালো-খারাপের প্রমাণ মাঠেই দিতে চান তাঁরা। তাই খেলার মতো কথার লড়াইও জমে উঠেছে এশিয়া কাপে।
গত বিশ্বকাপ থেকেই টি২০তে ভালো খেলছে না বাংলাদেশ। দেশে-বিদেশে কোথাও সেভাবে ম্যাচ জিততে পারছেন না সাকিবরা। জিম্বাবুয়ের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারের হতাশা নিয়ে গেছে এশিয়া কাপে। যদিও জয়ের ছন্দে ফিরতে দলটাকে সংস্কার করা হয়েছে কিছুটা। রাসেল ডমিঙ্গোর জায়গায় কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শ্রীধরন শ্রীরামকে। সবচেয়ে অভিজ্ঞ হাতে
তুলে দেওয়া হয়েছে দলের নেতৃত্ব। যদিও ক্রিকেটারদের চোটের কারণে সেরা দল নিয়ে যেতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব। এর পরও আশা করা হচ্ছে, সাকিবের নেতৃত্বে টি২০ এশিয়া কাপে ভালো খেলবে বাংলাদেশ। তাই শানাকারকেও প্রস্তুত থাকতে বললেন দলের প্রতিনিধি মিরাজ, ‘আসলে ভালো-খারাপ, এটা কিন্তু মাঠে প্রমাণ হবে। দেখেন একটা দল যদি মাঠে খারাপ খেলে
অবশ্যই ম্যাচ হেরে যায় আবার খারাপ দল ভালো খেললে জিতে যায়। এটা কিন্তু এ রকম না যে আমরা খারাপ বা ভালো! মাঠে পরিচয় হবে কারা ভালো, কারা খারাপ। যারা ভালো খেলবে
দিনশেষে তারাই ম্যাচ জিতবে। আমি চাই না যে এই দল ভালো ওই দল খারাপ- এমন মন্তব্য করতে। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলে প্রমাণ দিতে চাই মাঠে।’ বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে
শানাকার বিশ্নেষণ ছিল বোলিং নিয়ে। লঙ্কান দলপতির দাবি, সাকিবদের বিপক্ষে সহজ ম্যাচ হবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল বোলিং লাইনআপের জন্য, ‘আফগানিস্তানের বোলিং আক্রমণ বিশ্বমানের। অন্যদিকে, বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণে আমরা জানি, ফিজ (মুস্তাফিজুর রহমান) খুব ভালো বোলার। সাকিবও বিশ্বমানের। এর বাইরে তাদের দলে বিশ্বমানের কোনো
বোলার নেই। আফগানিস্তানের তুলনায় বাংলাদেশ ম্যাচ অনেক বেশি সহজ হবে। আমরা বাংলাদেশের বিপক্ষে অনেক ম্যাচ খেলি। আমরা জানি, ওরা ঠিক কী পরিকল্পনা করছে। পরের ম্যাচে এটার বড় ভূমিকা থাকবে। ওদের পরিকল্পনা জানা থাকায়, কাজটা অনেক সহজ হবে।’ কথার লড়াইয়ে মিরাজও কম যাননি। তিনিও দেখিয়ে
দেওয়ার চেষ্টা করলেন টাইগার বোলিং লাইন কতটা শক্তিশালী, ‘আমরা যদি ভালো ক্রিকেট খেলি তাহলে সবাই অবশ্যই জানবে যে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি, আমরা ভালো দল। আগে
থেকে কিছু অনুমান না করে মাঠে ভালো খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ।’ কাল শারজাহ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে। ঐতিহ্যবাহী এ স্টেডিয়ামে দুই দলের ব্যাটিং পার্থক্য গড়ে
দেবে বলে মনে করেন মিরাজ, ‘স্পিনিং উইকেট হলে আমরা যে সুবিধা পাব, ওরাও সেই সুবিধা পাবে। কারণ ওদেরও স্পিন অ্যাটাক ভালো, আমাদেরও ভালো। দেখতে হবে কারা ওই উইকেটে ভালো ব্যাটিং করছে। যারা ভালো ব্যাটিং করবে, তাদের
পক্ষে রেজাল্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। আমরা ভালো ব্যাটিং করলে আমাদের পক্ষে আসবে, ওরা ভালো ব্যাটিং করলে ওদের পক্ষে যাবে।’ শ্রীলঙ্কার চেয়েও বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ
এখন আফগানিস্তান। কাল জিতে গেলে মাঠেই জবাব দেওয়া যাবে শানাকাকে। যদিও লঙ্কান দলপতি খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে যুক্তি দেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি ফলেও যায়।