স্টিফেন ডোহেনিকে উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়ে শুরু। গ্রাহাম হিউমকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে শেষ। মাঝে আরও তিন উইকেট নেন হাসান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার সিলেটে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে পেসারদের স্বপ্নের একদিনে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে হাসান মাহমুদ নিলেন পাঁচ উইকেট। হাসানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১০১ রানে অলআউট আয়ারল্যান্ড।
ছোট্ট লক্ষ্যে বাংলাদেশ ছুঁয়ে ফেলে মাত্র ১৩.১ ওভারে, কোনো উইকেট না হারিয়ে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই প্রথম বাংলাদেশ দশ উইকেটে জিতল। এরচেয়ে বেশি বল বাকি রেখে একবারই জিতেছে বাংলাদেশ।
আইরিশদের বিপক্ষে আগে ফিল্ডিংয়ে নেমে পেসাররা দেখান অভাবনীয় দাপট। হাসান মাহমুদের সঙ্গে বাকি পাঁচ উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন তাসকিন আহমেদ ও ইবাদত হোসেন। বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে এই প্রথম প্রতিপক্ষের সবকটি উইকেট নিলেন পেসাররা। বাংলাদেশের পেসত্রয়ীর প্রথম দশে হাসান পেলেন প্রথম পাঁচ উইকেটের স্বাদ।
হাসানের ফুল লেংথের ডেলিভারি হিউমের প্যাডে লাগার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা জোরাল আবেদন করেন। সাড়া দেননি আম্পায়ার। রিভিউ নেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
রিপ্লে দেখে মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত বদলে দেন টিভি আম্পায়ার। রিভিউয়ের সাফল্যে হাসান নতুন উচ্চতায় উঠে যান। পাঁচ উইকেট নিতে ৮.১ ওভারে ৩২ রান খরচ করেছেন ২৩ বছর বয়সি এই পেসার।
ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশের নবম পেসার তিনি। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে আগুনে বোলিং করেছিলেন তাসকিন। হাসানের আগে ওই সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সবশেষ পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন তাসকিন।
কাল স্টিফেনকে আউট করার পর নিজের পঞ্চম ওভারে আবার জোড়া আঘাত হানেন হাসান। পল স্টার্লিংকে এলবিডব্ল–র ফাঁদে ফেলার পর একই ওভারে তুলে নেন হ্যারি টেক্টরকেও।
এরপর একই ওভারে জোড়া আঘাত হানেন তাসকিন আহমেদ ও ইবাদত হোসেনও। এক সময় মনে হয়েছিল হাসানকে তিন উইকেট নিয়েই হয়তো সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কিন্তু তৃতীয় স্পেলে বল হাতে নিয়ে প্রথমে ফেরান সর্বোচ্চ রান করা কার্টিস ক্যাম্পারকে। পরের ওভারে হিউমকে তুলে নিয়ে স্বপ্নের পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন। বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে এটি ১২তম সেরা বোলিং।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং ফিগার মাশরাফি মুর্তজার। কেনিয়ার বিপক্ষে ২০০৬ সালে ২৬ রানে ছয় উইকেট নিয়েছিলেন মাশরাফি। হাসানের আগের সেরা ছিল তিন উইকেট।
এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে দারুণ খুশি হাসান, ‘সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। এই পারফরম্যান্সে আমি খুবই রোমাঞ্চিত। আবহাওয়া ও কন্ডিশন পেসারদের সাহায্য করেছে।’
শীর্ষ পাঁচ ব্যাটার
ব্যাটার ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড় স্ট্রাইক রেট ৫০/১০০
লিটন দাস ৩ ১৪৬ ৭০ ৭৩.০০ ১০৪.২৮ ২/০
মুশফিকুর রহিম ৩ ১৪৪ ১০০* ১৪৪.০০ ১৬৭.৪৪ ০/১
তাওহিদ হৃদয় ৩ ১৪১ ৯২ ৭০.৫০ ১১৮.৪৮ ১/০
সাকিব আল হাসান ৩ ১১০ ৯৩ ৫৫.০০ ১০১.৮৫ ১/০
নাজমুল হোসেন ৩ ৯৮ ৭৩ ৪৯.০০ ৮৮.২৮ ১/০
শীর্ষ পাঁচ বোলার
বোলার ম্যাচ উইকেট সেরা গড় ইকনোমি ৪/৫
গ্রাহাম হিউম ৩ ৭ ৪/৬০ ১৯.০০ ৫.৭৮ ১/০
ইবাদত হোসেন ৩ ৬ ৪/৪২ ১১.৮৩ ৫.৫৩ ১/০
হাসান মাহমুদ ২ ৫ ৫/৩২ ৬.৪০ ৩.৯১ ০/১
তাসকিন আহমেদ ৩ ৫ ৩/২৬ ৮.২০ ২.৫৬ ০/০
নাসুম আহমেদ ৩ ৩ ৩/৪৩ ১৮.০০ ৪.৯০ ০/০