ক্রিকেট ইতিহাসের গ্রেটেস্ট কামব্যাক কোনটি? এই প্রশ্ন করলে অনেকটা চোখ বুজেই এ যুগের যেকোনো ক্রিকেট ফ্যান বলে দেবেন ভারতের দীনেশ কার্তিকের নাম।অথবা বুড়ো হাড়ের ভেলকি দেখানো ক্রিকেটারদের তালিকা করলে পাকিস্তানের
শোয়েব মালিককে সেখানে রাখতেই হবে। বয়স যে ফর্মের পড়তির কোনো কারণ নয়,কার্তিক কিংবা মালিক তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়া মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আরও ২ বছর খেলতে চেয়েছিলেন জাতীয়
দলের হয়ে। বাদ পড়ার পরও যেহেতু দরজা বন্ধ হয়নি, রিয়াদ কি পারবেন দীনেশ কার্তিক বা শোয়েব মালিক হয়ে উঠতে? ২০২১ সালে আচমকাই টেস্ট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নেন
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বোর্ড তাকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলেও অনড় ছিলেন সাবেক এই অধিনায়ক,কারণ তখন তার পূর্ণ মনোযোগ সাদা বলের দুই ফরম্যাটে। তখন রিয়াদ ছিলেন
টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক। স্বভাবতই সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাটের দলের মধ্যমণি।তবে ধীরে ধীরে যেন ধার কমতে থাকে তার ব্যাটের। যার ফলশ্রুতিতে টি-টোয়েন্টি দলে
জায়গা হারাতে হল তাকে। যদিও রিয়াদ চেয়েছিলেন আরও অন্তত ২ বছর জাতীয় দলের হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন। ২০২৩ বিশ্বকাপ পর্যন্ত হয়ত ওয়ানডেটা খেলা হবে, কিন্তু রিয়াদের
টি-টোয়েন্টির দরজাও কিন্তু একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি! অবসর নেওয়ার আগপর্যন্ত যেকোনো ক্রিকেটারকেই বিবেচনা করতে হয় জাতীয় দলের জন্য। যেহেতু রিয়াদ টি-টোয়েন্টি
ফরম্যাট থেকে অবসর নেননি, তার পারফরম্যান্স তাই বিবেচনা করতে বাধ্য নির্বাচক প্যানেল। ঘরোয়া ক্রিকেট কিংবা বিপিএলে অতিমানবীয় পারফরম্যান্স করলে আবারও টি-২০ দলে ফেরার সুযোগ থাকছে সাইলেন্ট
কিলারের। আর সেক্ষেত্রে যদি এই কাজটাকে কারও অসম্ভব মনে হয়, তাহলে প্রেরণা হিসেবে কার্তিক ও মালিক তো থাকছেনই! ২০২১ সালে যখন ধারাভাষ্যে অভিষেক হয় দীনেশ কার্তিকের,তখন সবাই ধরে নিয়েছিলেন তার অবসরের ঘোষণা হয়ত নিছক সময়ের
ব্যাপার। তবে সবাইকে ভুল প্রমাণ করে আইপিএলে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স দেখান কার্তিক।তার মারকুটে ব্যাটিংয়েই এখন নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখছে ভারত। অথচ ৩৭ বছর বয়সী কার্তিক সেই ২০০৭ সালে ভারতের টি-টোয়েন্টি
বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য ছিলেন, যে দলের আর কেউই এখন মাঠে নেই। শোয়েব মালিক হয়ত বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পাননি, তবে তাতে তার মাহাত্ম্য কমে যায়নি। গত বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছিলেন আরেক ক্রিকেটারের চোটের কারণে।এরপর পাকিস্তানকে সেমিফাইনালে তুলতে
রেখেছিলেন বড় ভূমিকা। ৪০ বছর বয়সী এই ব্যাটার এখনও এতটা ফিট আর ফর্মে আছেন যে, তাকে বিশ্বকাপ দলে না রাখায় রীতিমত হাহুতাশ চলছে পাকিস্তানের সমর্থকদের।বিসিবি রিয়াদকে মাঠ থেকে অবসরের সুযোগ দিতে চাইলেও রিয়াদ
নিজেকে প্রমাণ করে আবারও টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা করে নিতে মরিয়া। কয়দিন আগেও যিনি ছিলেন অধিনায়ক, সেই রিয়াদ কি পারবেন দীনেশ কার্তিক আর শোয়েব মালিকের মতো নজির গড়তে?