মুসলিম উম্মাহর সর্ববৃহৎ এবং দ্বিতীয় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য লাভের এবং সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম মাধ্যম কোরবানি। সামর্থ্যবান পুরুষ-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এটি ই’সলামের মৌলিক ইবা’দতের অন্তর্ভুক্ত। আদম (আ.) থেকে শুরু করে সব ন’বীর যুগেই কোরবানি পালিত হয়েছে। এটি
‘শাআইরে ইসলাম’ তথা ইসলামের প্রতীকী বিধানাবলির অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং এর মাধ্যমে ‘শাআইরে ইসলামের’ বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এছাড়া গরিব-দুখী ও পাড়া-প্রতিবেশীর আপ্যায়নের ব্যবস্থা হয়। আল্লাহ ও তার রা’সূলের শর্তহীন আনুগত্য, ত্যাগ ও বিসর্জনের শিক্ষাও আছে কো’রবানিতে। নবীজীকে
আল্লাহতাআলা নির্দেশ দিয়েছেন- আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাওসার:২) অন্য আয়াতে এসেছে- (হে রাসূল!) আপনি বলুন, আ’মার নামায, আমার কোরবানি, আমার জীবন,আমার মরণ রাব্বুল আলামীনের জন্য উৎসর্গিত। (সুরা আনআম : ১৬২) আল্লাহর সন্তুষ্টির
উদ্দেশ্যে কোরবানি করা পশুর গোশত বন্টনের একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। মহানবী (সা.) কোরবানির পশুর গোশত ভাগ করার নিয়ম সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) কোরবানির গোশতের এক’ভাগ
নিজের পরিবারকে খাওয়াতেন, একভাগ গরীব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ দিতেন গরীব-মিসকিনদের। এছাড়া ই’বন মাসঊদ (রা.) কোরবানীর গোশত তিনভাগ করে একভাগ নিজেরা খেতেন, একভাগ যাকে চাইতেন তাকে খাওয়াতেন এবং একভাগ ফকির-মিসকিনকে দিতেন বলে উল্লেখ রয়েছে। কোরবানির
গোশত আত্মীয় ও গরিবদের মাঝে বিতরণ না করাটা খুবই গর্হিত কাজ। এতে কৃপণতা প্রকাশ পায়। কারণ কোরবানির মাধ্যমে কোরবানিদাতা অহংকার থেকে নি’রাপদ থা’কেন এবং তার অন্তর পরিশুদ্ধ থাকে। সূরা হজ এর ৩৭-৩৮ আয়াতে বলা হয়েছে, ‘কিন্তু মনে
রেখো কোরবানির গোশত বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ সচেতনতা। এই লক্ষ্যেই কোরবানির পশুগুলোকে তোমাদের অধীন করে দেয়া হয়েছে। অতএব আল্লাহ তো’মাদের সৎপথ প্রদর্শনের মাধ্যমে যে কল্যাণ দিয়েছেন,
সেজন্যে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো। হে নবী! আপনি সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দিন যে, আল্লাহ বিশ্বাসীদের রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো বি’শ্বাসঘাতক, অ’কৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।’