প্লেয়ার ইমপ্যাক্ট, বাংলাদেশের ক্রিকেটে খুব আলোচিত একটি টার্ম। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণার সময় নাজমুল হোসেন শান্তকে কেন নেয়া হলো, তার ব্যখ্যা দিতে গিয়ে প্লেয়ারের ইমপ্যাক্টের বিষয়টা খুব করে তুলে ধরেছেন টেকনিক্যাল
অ্যাডভাইজার শ্রীধরন শ্রীরাম ও প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। বাংলাদেশের ক্রিকেটে আলোচিত বিষয়টাই এখন বিশ্ব ক্রিকেটের আলোচনার বিষয়বস্তু হতে যাচ্ছে। টি-টোয়েন্টিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নামে নতুন এক নিয়ম চালু করতে
যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতা, বিশেষ করে সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ – এর ধারণাটি চালু করতে যাচ্ছে বিসিসিআই। আর এটি
এই মৌসুম থেকেই কার্যকর করা হবে। ফরম্যাটটিকে আরও আকর্ষণীয়, গতিশীল করে তুলতেই এই ব্যবস্থা। এতে শুধু দর্শকদের জন্য নয়, একটি কৌশলগত দৃষ্টিকোণ থেকে অংশগ্রহণকারী দলগুলির জন্যও আকর্ষণীয় হতে চলেছে।
এই নিয়মের ফলে ম্যাচ চলাকালীন ১১ নয়, ১৫ জন খেলোয়াড় প্লেইং একাদশে জায়গা করে নিতে পারবেন। ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট সৈয়দ মুস্তাক
আলী ট্রফি থেকে এ নিয়ম চালু হতে চলেছে। এই নিয়ম অনুযায়অ, ম্যাচ চলাকালীন প্লেইং একাদশে যে কোনও একজন খেলোয়াড় পরিবর্তন করা যাবে। এর জন্য টসের সময় ১১ জনের
মধ্যে ৪ জন অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের নাম দিতে হবে দলকে। অর্থাৎ এই ১৫ জন খেলোয়াড় ম্যাচ খেলার যোগ্য হবেন। ৪টি অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের মধ্যে যে কোনো একজনকে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করা
যেতে পারে। নিঃসন্দেহে এটি অভিনব ধারণা। একাধিক সংবামাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিসিসিআই এই বিষয়ে একটি সার্কুলার পাঠিয়েছে সমস্ত রাজ্য অ্যাসোসিয়েশনকে। এর ফলে টি-টোয়েন্টি ফর্ম্যাটটি আরও আকর্ষণীয় এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। একটি ম্যাচ চলাকালীন উভয় দলই একজন
প্রভাবশালী খেলোয়াড়কে একবার ব্যবহার করতে পারে। বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র স্পষ্ট করেছে যে, এটি আপাতত সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে চালু করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে অন্য ইভেন্টগুলিতে এটিকে সম্প্রসারণ করা হবে কি না, সেটা ভবিষ্যতে বিসিসিআইয়ের উপর নির্ভর করে। এ
পর্যায়ে, বিসিসিআই আইপিএলে এটির ব্যবহার করার কথা কিছু বলেনি। এক্স ফ্যাক্টর নামে অস্ট্রেলিয়ার টি-টোয়েন্টি লিগ বিগ ব্যাশে এই নিয়ম প্রযোজ্য। এতে, প্রতিটি দল প্রথম ইনিংসের দশম ওভারের আগে প্লেইং-একাদশের ১১ বা ১২ নম্বর খেলোয়াড়কে ব্যবহার করতে পারে। এমন খেলোয়াড়দের দ্বারা এই পরিবর্তন
করা যেতে পারে, যারা এক ওভারের বেশি ব্যাট বা বোলিং করে না। বিসিসিআইয়ের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, উভয় ইনিংসের ১৪তম ওভারের আগে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার ব্যবহার করা যাবে। নতুন প্রবর্তন করতে যাওয়া নিয়মটি অতীতের সুপার সাব নিয়ম
দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে পারে এবং এটি খেলাটিকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলতে পারে। বিসিসিআই স্পষ্ট করেছে, একজন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার শুধুমাত্র একাদশের বাইরে থেকে হতে
পারে এবং আউট হওয়া ব্যাটসম্যানের বদলিও হতে পারে। অধিনায়ক, টিম ম্যানেজার বা প্রধান কোচ চতুর্থ আম্পায়ারকে, উইকেট পতনের সময় কিংবা ইনিংস বিরতিতে, ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের পরিচিতি সম্পর্কে অবহিত করতে পারেন। ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার আসার পর যে প্লেয়ার আউট হবে, তাকে আর পুরো
ম্যাচে ব্যবহার করা যাবে না। অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামতেও পারবেন না তিনি। যদি বোলারের জায়গায় একজন প্রভাবশালী খেলোয়াড় আনা হয়, সে ক্ষেত্রে যে প্লেয়ারকে তুলে নেওয়া হচ্ছে, তিনি ইতিমধ্যে কত ওভার বল করেছেন, সেটি ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের
উপর কার্যকর হবে না। অর্থাৎ ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার পুরো ৪ ওভার বল করতে পারবে। ম্যাচ চলাকালীন সাসপেন্ড প্লেয়ারের জায়গায় ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার ব্যবহার করা যাবে না।